রমজান আসতে বাকী ৬ দিন...

কক্সবাজারে কোন দোকানেই টাঙ্গানো হয়নি দ্রব্য মূল্যের তালিকা

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল

কক্সবাজার শহরের কাঁচাবাজারসহ কোন দোকানেই এখনো টাঙ্গানো হয়নি পণ্যের সঠিক দাম দ্রব্যমূল্যে তালিকা। তবে কয়েকটি বাজারে দ্রব্যমূল্যের তালিকায় কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন পণ্যের নাম লেখা থাকলেও টাকার অংশটি খালি রয়েছে। এতে কৌশলে হয়রানির শিকার হচ্ছে মানুষ।

এদিকে আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, প্রত্যেক দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা-সহ বিভিন্ন জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ২৩ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা করেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ কমিটি।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্যরা সোমবার সন্ধ্যায় শহরের বড়বাজারসহ বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করেন। এসময় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন,বাজার করতে এসে একজন সাধারন মানুষ ক্রেতাও যেন হয়রানির শিকার না হয়। বাড়তি মূল্য আদায়সহ বেচাকেনায় কেউ কষ্ট পেয়েছেন এমন অভিযোগ কানে আসলে কোন ভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। ব্যবসায়ীদের বিন্দু মাত্র অনিয়ম দূর্নীতি মেনে নেয়া হবে না হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন নগর পিতা।

জানা যায়, বাজার মালিক সমিতি, খুচরা এবং পাইকারি বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে পবিত্র রমযানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে প্রশাসনের পক্ষে থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি কাঁচাবাজার ও দোকানে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে দিতে ও ডিজিটাল ওজন পরিমাপক মেশিন স্থাপন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ নানা বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

গতকাল শহরের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছ, পিটিস্কুল বাজার, কালুর দোকান বাজার ও কানাই বাজার, বাহারছড়া

বাজারসহ বেশির ভাগ বাজার ও দোকানে সঠিক দ্রব্য মূল্যের তালিকা টাঙ্গানো হয়নি। যে কয়েকটি দোকান ও বাজারে দেখা গেছে তাতে দাম বেশি বলে ধারণা করেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

তবে কয়েকদিনের ব্যবধানে বেগুন, চিনি, টমেটো পেঁয়াজসহ কিছু কিছু পণ্যের দাম আগের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। পাইকারী বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

পিটিস্কুল এলাকার মো. সলিম নামে এক রিক্সা চালক বলেন, সামনে কয়েকদিন পরে রমজান মাস শুরু হবে। অথচ এখন সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত রিক্সা চালিয়ে আয় হতো ৫’শ টাকা। ততমধ্যে থেকে ১২০ টাকা রিক্সা বাড়া চলে গেলে বাকী থাকতো ৩৮০ টাকা। তা নিয়ে কোন রকম সংসার চলতো। সামনে রোজা রেখে কিভাবে ৫’শ আয় করবো চিন্তায় আছি। তারমধ্যে আবার নিত্যপণ্যের দামও বাড়তে চলছে। যদিও এখনের চেয়েও রমজানের মাসে বেশি দাম বেড়ে যায় না খেয়ে থাকতে হবে। এ জন্য রমজানে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রমজান মাসকে টার্গেট করে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। ২৯ এপ্রিল সদরের চৌফলদন্ডী বাজারের কয়েকটি দোকানে ভেজাল খাদ্য, মেয়াদ শেষ হওয়া জিনিস, পচা-বাসি খাবার বিক্রি করায় অভিযান পরিচালনা করেন কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার।

এসময় রমজানে দ্রব্য মূল্যে সহনীয় রাখতে ও দোকানে দ্রব্য মূল্যের তালিকা টাঙ্গানোর জন্য নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ব্যবসায়িদের রাস্তার উপর পণ্য রেখে গাড়ী চলাচলে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি না করা, পণ্যের সঠিক দাম মূল্য তালিকায় টাঙ্গিয়ে রাখা, কোন ভাবেই দাম বাড়িয়ে না রাখা এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানী না করার জন্য ব্যবসায়িদের প্রতি নির্দেশ দেন। এর ব্যতিক্রম হলে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান। জেলা প্রশাসন কর্তৃক ভ্রাম্যমান আদালত অব্যাহত থাকবে।